১১ পদের চায়ের আড্ডায় জমে উঠুক সন্ধ্যা

চা পাগলদের রেসিপি

লেবু ও মধুর ধোঁয়া ওঠা চাঃ

উপকরণঃ

পানি- সাড়ে ৪ কাপ, মধু- ৪ চা চামচ, লেবুর রস- ২ চা চামচ, দারচিনি গুঁড়া- ১/২ চা চামচ, এলাচের দানা গুঁড়া- ১/২ চা চামচ, চা- ১ চা চামচ।

প্রণালীঃ

এই রেসিপিটি চারজন মানুষের জন্য। অর্থাৎ উপকরণ অনুপাতটি চারকাপ চায়ের জন্য। কিন্তু মশলা ফুটানোর সময় কিছুটা পানি উবে যাবে। তাই এই ক্ষেত্রে চার কাপ চায়ের জন্য সাড়ে চার কাপ পানি নিন।

আপনি যদি চা বেশি কড়া করতে চান অথবা মশলার গন্ধ তীব্র করার জন্য বেশিক্ষণ ফুটাতে চান তবে সেই অনুযায়ী পানি একটু বেশি দিবেন। চুলায় পানি ফুটতে দিন। পানি ফুটা শুরু করলে এতে দারচিনি গুঁড়া ও এলাচের দানা গুঁড়া দিন। দুই থেকে তিন মিনিট ফুটান। আপনি আস্ত এলাচ ও দারচিনিও দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আর একটু বেশি সময় ফুটাতে হবে। এবার এতে চা পাতা দিয়ে দিন।

চায়ের সুন্দর রঙ ধরা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। চা পাতার মান ভালো নাহলে এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই সুন্দর রঙ ধরে যাবে। এবার মধু দিন। এক মিনিট পর চুলা বন্ধ করে লেবুর রস দিন। এবার গরম গরম পরিবেশন করুন লেবু- মধুর ধোঁয়া ওঠা চা। একটা কথা না বললেই নয়।

এই চা শুধু সুস্বাদুই নয়, স্বাস্থ্যকরও বটে। বিশেষত যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের জন্য এই চা অনেক বেশি কার্যকর। কারণ এই চায়ের সব উপকরণই ওজন কমানোর গতি বাড়াতে সক্ষম।

দুধ- আদা- ক্রিম চাঃ

এই চা আবার স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের জন্য নয়। কারণ এতে ওজন বাড়ানোর যথেষ্ট উপকরণ রয়েছে। তবে স্বাদের কথা চিন্তা করলে এর তুলনা হয় না।

উপকরণঃ

গরুর দুধ- ২ কাপ, পানি-দেড় কাপ, চিনি- ৩ চা চামচ, চা পাতা- দেড় চা চামচ, ডানো ক্রিম- ৩ চা চামচ, আদা কুচি- ১ টেবিল চামচ।

প্রণালীঃ

পানি ও গরুর দুধ একসাথে ফুটান। ঘন গরুর দুধ ব্যবহার করবেন। দুধ ফুটে উঠলেই চিনি দিতে হবে। সেই সাথে আদা কুচিও দিয়ে দিতে হবে। পাঁচ মিনিট ধরে ফুটান। এবার চা পাতা দিন। আরো পাঁচ মিনিট ধরে ফুটান।

দেখবেন চা পাতা ফুটে খুব সুন্দর রঙ ধরেছে। এবার কাপে ছেঁকে নিন। পরিবেশনের ঠিক আগ মুহূর্তে কাপে এক চা চামচ ক্রীম দিয়ে সার্ভ করুন। দেখবেন এই অন্য স্বাদের চা আপনার অতিথিদের কী খুশিই না করে দেয়।

মালাই চা

উপকরণ:

তরল দুধ ৩ কাপ, চা-পাতা ৪ টেবিল চামচ, ডিমের কুসুম ১টা, চিনি স্বাদমতো, বাটার বিস্কুটের গুঁড়া ১ চা-চামচ, দুধের সর বা মালাই ৩-৪ চা-চামচ।

প্রণালি:

দুধের সঙ্গে ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিন। চুলায় দুধ ফুটে উঠলে মালাই ছাড়া বাকি সব দিয়ে দিন। চায়ের কাপে মালাই দিন। চা ফুটে গেলে নামিয়ে একটু ওপর থেকে কাপে ঢালুন, যেন চায়ে ফেনা ওঠে। গরম গরম পরিবেশন করুন।

লেবু চা

উপকরণ:

চা-পাতা ১ চা-চামচ, চিনি ২ চা-চামচ, লেবুর রস ২ চা-চামচ, লবণ ১ চিমটি, পানি ২ কাপ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ১টি।

প্রণালি:

চুলায় পানি ফুটে উঠলে লেবু ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিতে হবে। লালচে হলে লেবু দিয়ে নামিয়ে নিন। লেবুর ছোট টুকরা ও সামান্য আদা কুচি কাপে দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

মসলা চা

উপকরণ:

তরল দুধ ১ কাপ, চা-পাতা ১ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, কারিপাতা ৩টা, আদা কুচি ১ চা-চামচ, এলাচি ২টা, দারুচিনি ২ টুকরা, তেজপাতা ১টা।

প্রণালি:

দুধে সব মসলা ও চিনি দিয়ে জ্বাল দিন। গরম হলে চা-পাতা দিন। চা ফুটে উঠলে নামিয়ে ছেঁকে পরিবেশন করুন।

আমলকী চা

উপকরণ:

আমলকী কুচি ৪ টেবিল চামচ, পানি ৩ কাপ, লবঙ্গ ২-৩টা, চা-পাতা ২ চা-চামচ, পুদিনা কুচি ১ টেবিল চামচ, চিনি ৩ চা-চামচ।

প্রণালি:

ফুটন্ত পানিতে আমলকী, চিনি, লবঙ্গ, পুদিনা কুচি ও চা-পাতা দিন। লালচে হলে নামিয়ে চা ছেঁকে কাপে কিছু পুদিনা ও আমলকী কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

মাল্টা বা কমলার চা

উপকরণ:

মাল্টা বা কমলার রস ১ কাপ, পানি ১ কাপ, মাল্টা বা কমলার খোসা কুচি ১ চা-চামচ, চিনি ২ চা-চামচ, পুদিনা কুচি ১ চা-চামচ, চা-পাতা ১ চা-চামচ। ঠান্ডা খেতে চাইলে বরফ কুচি পরিমাণমতো।

প্রণালি:

পানিতে মাল্টা বা কমলার রস, খোসা, চিনি ও পুদিনাপাতা দিয়ে ফুটতে দিন। চা-পাতা দিয়ে কয়েক মিনিট পর নামিয়ে ছেঁকে পরিবেশন করুন। ঠান্ডা খেতে চাইলে ঠান্ডা হলে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

সাত রঙের চা

সিলেট শ্রীমঙ্গলের বিখ্যাত সাত রঙের চা সবার কাছেই খুব আকর্ষণীয়। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ শ্রীমঙ্গল ছুটে যান চা-টি খেতে। তবে বাড়ি বসেই যদি সাত রঙের চা তৈরি করা তবে আর কষ্ট কেন। ঝটপট দেখে নিন রেসিপিটি..

যা যা লাগবে:

চা পাতা
চিনি
কনডেন্স মিল্ক

প্রস্তুত প্রণালী:

১.প্রথমে ১ টেবিল চামচ চিনির সাথে ২ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে সিরা করে নিতে হবে।.

২.পরিমাণ মতো পানি এবং চা পাতা চুলায় জ্বাল দিয়ে লিকার তৈরী করে নিন।.

৩.১ টেবিল চামচ লিকার ও ১ চামচ সিরা মিশিয়ে রাখুন।

৪.তারপর ২ টেবিল চামচ কনডেন্স মিল্কের সাথে ১ টেবিল চামচ লিকার মিশিয়ে নিতে হবে।

৫.তারপর একটা কাপে প্রথমে প্লেইন সিরা ঢেলে নিয়ে ২০ সেকেন্ড পরে সিরা মেলানো লিকার টা দিতে হবে।

৬.এর ৩০ সেকেন্ড পরে কনডেন্স মিল্কের মিশ্রন দিতে হবে।

৭.তার ১ মিনিট পর বাকি লিকারটুকু গরম করে একদম কাপের ধার ঘেষে আস্তে আস্তে ঢালতে হবে।

৮.দেখুন সহজেই তৈরী হয়ে গেলো সাত রঙের সেই চা।

আদা চা:

সাধারণ সর্দি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথায় আদা চায়ের উপকারিতা আমরা প্রায় সবাই জানি। গরম এক কাপ চা জাদুর মত মাথা ব্যথা সারাতে সাহায্য করে। এর রেসিপিতে আপনাকে পানি গরম করার সময় আদা টুকরা করে দিয়ে কিছুক্ষন জ্বাল দিতে হবে। এরপর চা পাতা ও চিনি দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এছাড়া চা বানিয়ে তাতেও আদার কিছুটা রস মিশিয়ে চা পান করা যায়।

পুদিনা চা:

পুদিনা চা পেটের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে। পুদিনা চা বানাতে তাজা অথবা শুকনো দু’রকম পাতাই ব্যবহার করা যায়। ২ কাপ পানি, দেড় কাপ তাজা পাতা অথবা ১ চা চামচ শুকনো পাতা, স্বাদের জন্য চিনি, মধু ও লেবু দেয়া যেতে পারে। পানি ফুটিয়ে পান করার ২-৩ মিনিট আগে গরম পানিতে পাতা দিয়ে রেখে দিতে হবে নির্যাস বের হবার জন্য।

তুলসি চা:

অসাধারণ উপকারী এই তুলসি চা সর্দিজনিত মাথা ব্যাথা, কাশি, সর্দি জ্বর ও ঠান্ডা লাগা দূর করে।এটি দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা পেতেও সাহায্য করে। ২ থেকে ৩ কাপ পানিতে ৫/৬ টি তুলসি পাতা ফুটতে দিন। পানি ফুটে ১ কাপ পরিমাণ হয়ে এলে তা নামিয়ে গরম গরম পান করুন যন্ত্রণার উপশম হবে। এটি অ্যাসিডিটি নিরাময়ে অনেক জনপ্রিয়। তুলসি চা প্যাকেটে বাজারে কিনতেও পাওয়া যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button